দীপঙ্কর মুখার্জী-এর একটি কবিতা:(অক্ষমালী)
ভয়
জানি না ব্রাহ্মণ্যরাজ কতটা নিষ্ঠুর ছিল,
কেমন ছিল অস্পৃশ্যতার সে সুতীক্ষ্ণ দংশন।
ফ্যালফ্যালে চোখে কিশোরীর দেবী দর্শনের নিষেধাজ্ঞার কালো রঙ
কতটা ঘনীভূত হতো শ্রাবণধারায়, তাও জানি না।
জানি না সন্তান বুকে তুলে সুধা দেওয়া কোনো মায়ের বুক
এভাবে আর কখনো সংশয়ে দুলতো কি না।
এমন চৈতি রাতে প্রিয়ার সুগন্ধী চুলে সামান্য স্পর্শেও
ভয়ে হিম হতো কি না কোনো বেনীমাধবের আঙুল, তাও জানি না।
শুধু জানি ক্ষণস্থায়ী কোনো মাহেন্দ্রক্ষণে এ ভয়ের
কলস সকলকে নিমেষে শুধুই মানুষ করেছে।
এ ভয় অনেকের ঘরের রন্ধ্রে খড় জুগিয়েছে,
ঘুম ভাঙতেই হারিয়ে যাওয়া সংসার থালায় বেড়ে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে বহুযুগ পর চেটেপুটে দেখার জন্য।
এ ভয় ফিরিয়ে দিয়েছে সন্ত্রস্ত পক্ষীকূলকে তাদের বড়ো আপনার নিখিল এ ভূবন,
এ ভয় নগর জীবনকে দিয়েছে গাঢ় অপরাজিতা রঙের এক অবারিত আকাশ,
অনন্ত বৃক্ষকূলকে দিয়েছে নির্মেদ শ্বাসবায়ু প্রস্তুতের অফুরন্ত আয়োজন।
করোনাকে দেশত্যাগী করে এ ভয়কে আমি পান করতে চাই আকন্ঠ।